পৃথিবীকে অনেক কিছু দেয়ার
আছে আপনাদের
আমার নাই।
আমি বুঝে গেছি আমার কিচ্ছু
দেয়ার নাই পৃথিবীকে
তাই ঘুম পেলে আমি ঘুমিয়ে
পড়ি
ঘুম না এলে জেগে থাকি, স্ত্রী
অপেক্ষা করে থাকলে আমি তার কাছে যাই।
সন্তানেরা রাত জেগে খুনসুটি
করে, আমার দেখতে বেশ লাগে
আমি তাদের ঘুমাতেও বলি না।
ওরা ঠিকমত পড়েও না। গান শোনে,
গিটার বাজায়
মোবাইল চালায়। পরীক্ষায় খারাপ
করে। করুক
আমার কিছু দেয়ার নাই পৃথিবীকে
এমনকি সামান্য উপদেশও। এইসব
আপনাদের কাজ
আপনারা বরং আদেশ করেন
আর বলেন নিজেকে ভালো রাখতে
হলে কী কী করতে হবে আমাকে
পৃথিবীর মহান সিস্টেমকে বাঁচিয়ে
রাখতে হলে কী কী করতে হবে
আমি বরং সেই রকমই করব। আপনারা
যেই যেই ভাবে তৈরি করে রেখেছেন ভালো মন্দ
তবু কাউকে উপদেশ দিতে বলবেন
না আমাকে
কেবল নিজের আয়ুর অংক উর্ধ্বক্রম
দেখানো ছাড়া
পৃথিবীকে দেয়ার কিছু নাই
আমার
কিংবা যা যা দেয়ার ছিল সব
দিয়েছি
আপনাদের বানানো নিয়মে আমি
নতজানু থেকেছি
উচ্চস্বরে গ্রহণ করেছি শিক্ষা,
উন্নত শিরে গ্রহণ করেছি বিলাস।
বংশ বিস্তারের প্রয়োজনীয়
এবং অপ্রয়োজনীয় সমস্ত যোগ উপযোগ আমি গ্রহণ করেছি নতঃশিরে
ভাঙা মিটশেফের খাবার খেয়ে
ফেলতো বলে
না বোঝা বয়সেই খুব কিউট দেখতে
একটা বিড়াল মেরে ফেলেছিলাম আমি
যদিও মনুষ্যত্বের জয়গানে
এইসব হত্যাকান্ড খুব মামুলি বিষয়
বরং মানুষের মহানুভবতা এই
যে মানুষ ধর্ম আর নানারকম নিয়মকানুন বানিয়ে টানিয়ে কাফফারারও ব্যবস্থা রেখেছে এইসবে।
সুতরাং আপনারা মেটাভার্সের
স্যাটা ফাটিয়ে দিয়ে নোবেল বা কতবেল ঘোষণা করুন শ্রেষ্ঠ চিন্তকের জন্য
আর চিন্তার ছাঁচ বানিয়ে রাখুন
আপনাদের মোটা মোটা গ্রন্থে
আমাকে চিন্তাও করতে বলবেন
না
যেহেতু আমার মগজ আমি সাগ্রহে
তুলে দিয়েছি আপনাদের হাতে
আর, নয় তলার ঘরে আরাম আয়েশে
শুয়ে বসে আমি অপেক্ষা করছি
পৃথিবীর ধ্বংসাবশেষের উপর
দাঁড়িয়ে একটা
নিখাদ দুঃখময় কবিতা লিখব
বলে
এর বেশি আর কিচ্ছু দেয়ার
নেই আমার
১১.০২.২০২২